নিরাপদ সড়ক চাই! তা নিয়ে কিছু দিন আগে আমাদের দেশে বেশ কিছু ঘটনাও ঘটে গেলে। নিরাপদ সড়কের দাবীতে আমরা আন্দোলন, মিটিং, মিছিল করলাম এবং সরকার আমাদের দাবিগুলো মেনে নিলেন। কিন্তু তার ফলে কি আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো! পাবো না! কারন সরকারের একার পক্ষে পরিবর্তন আনা সম্ভব না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের মাঝে পরিবর্তন না আসে । আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগের একটা ফ্লাশ ব্যাক দিয়ে আসেন ঢাকার অবস্থা কি ছিলো আর এখন কি আছে, বোঝতে পারবেন! সরকার আমাদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচে করে রাস্তা মেরামত , এত ফ্লাইওভার, এত ওভারব্রিজ করা হয়েছে। যা দশ বছর আগে তখন ছিলো না! কেন করা হয়েছে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য, নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু তার পরেও আমরা নিরাপদ না! কারন আমাদের অবহেলা আর সচেতনতা অভাব। রাস্তা পারাপারের ওভারব্রিজ ব্যবহার করা উচিত, আমরা চিন্তা করি কি দরকার এত উপর দিয়ে উঠে যাওয়ার তার চেয়ে ভালো, রাস্তার মধ্যে দিয়ে দু' একটা গাড়ি থামিয়ে চলে যায় কিন্তু আদৌ কি এই কাজটা করা ঠিক হয়েছে? কি না, তা আমরা ভাবি না.....!ঢাকায় যারা আছেন তার একটি জিনিষ দেখতে পাবেন, আপনি যে কোম্পানির বাসে বসে আছেন তার সামনে যদি একেই কোম্পানির অন্য একটি বাস চলে যার যাত্রীরা ড্রাইভারকে অকথ্য ভাষা গালাগালি করতে থাকে, কেন! ভাই তারা কি মানুষ না, তারা তো আপনার আমার মতই কোন মায়ের সন্তান। কেন তাদের সাথে আমরা এই ধরনের ব্যবহার করবো? আর যদি বাস ভাড়া ২/১ টাকা বেশি নেয় তাহলে তো গাড়ির হেলপার, ড্রাইভার, মালিকসহ গালাগালি শুনতে হয়। অন্যদিকে কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ওয়েটারকে যদি ১০০/২০০ টাকা বকশিশ না দেই তাহলে আমাদের মান সম্মান নাকি থাকবে না এই চিন্তা করি! কেন হোটেল মালিক কি তাদের কর্মচারীদের বেতন দেয় না? তো তাদের কে কেন ১০০/২০০ টাকা বকশিশ দিতে হয় আর এই দিকে বাস ভাড়া ২/১ টাকা বেশি নিছে তা বিপদে পরছে!একবার কি চিন্তা করেছেন তাদের উপর নির্ভর করেই আমরা আমাদের গন্তব্যস্থানে পৌঁছায় । আরে ভাই এই সব কিছুর জন্য আমাদের দেশের কোন দোষ না! দোষ আমাদের মন মানসিকতার আমাদের চিন্তা চেতনার? এ সব থেকে যতদিন পর্যন্ত বের হয়ে আসতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমাদের দেশের উন্নতি সম্ভব না। আর তার জন্য যার যার জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে ।এবার আসি গাড়ির লাইসেন্স নিয়ে, গাড়ির লাইসেন্স করতে গেলে নাকি কিছু দালাল আছে তারা আপনাকে বলবে কি দরকার এত কষ্ট করে এখানে আসার আমাকে ফোন দিতেন আমি সব ব্যবস্থা করে রাখতাম। এই হলো অবস্থা! একবারও চিন্তা করে দেখলো না, আমি যে তাকে গাড়ি চালানোর লাইসেন্স দিবো আদৌ কি সে গাড়ি চালানোর যোগ্য কি না! তা আমরা ভাবি না। আর ভাবই বা কেন, তার কাছ থেকে তো মোটা অংকের টাকা পাচ্ছি। আর এসকল কারণেই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। যে কারণে আজকের লেখাটা তা হলো আমার এক পরিচিত লোক তার চারা মৃত্যু কাহিনী বললেন, তার চাচা মাগরিবের নামাজ পরে রাস্তা পার হতে গিয়ে মাইক্রোবাসের চাপায় মারা যায়। সাথে ছিলো তার ছোট ভাই, সে রাস্তা পার হয়ে গেয়েছিলো, তার চোখের সামনে বড় ভাইয়ের মৃত্যু সে কিছুতেই যেন মানতে পারছে না। বাড়িতে তার লাশ দেখে ছেলের শোকে মা রাত ১১ টায় মারা গেলেন। পরিবারের এই শোকের ছায়া দেখে তার বাবা মানতে পারেনি পরদিন বিকাল বেলা বাবাও মারা যায়। আমি জানি না বিষয়টা শুনার পর আপনাদের কাছে কেমন লাগছে কিন্তু আমি শুনার পর খুবই মর্মাহত হয়েছি। আর এজন্য বলে থাকে একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। তাই সবাই সচেতন হোন , নিরাপদে থাকুন।