ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরব আমরা। পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে উপভোগ করব ঈদের আনন্দ। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে আমাদের। ইতিমধ্যে আমরা অনেকেই বেতন-বোনাস পেয়ে প্রিয় মানুষদের জন্য পছন্দের নতুন পোশাক কেনা হয়ে গেছে। সেই পোশাকগুলো রেখেছি যত্ন করে। গাড়ির অগ্রিম টিকিটও সংগ্রহ করেছি অনেক কষ্ট করে। বাকি শুধু ছুটির দিনের অপেক্ষা। রোজার দিনগুলো পার হচ্ছে। দিন গুনছি কয়টা রোজা পার হলো। কত আশা নিয়ে বাড়িতে যাব। বাড়িতে গিয়েই বাবা-মায়ের পায়ে দুই হাত রেখে সালাম করব। বাবা-মা মাথায় হাত রেখে প্রাণভরে দোয়া করবেন। কত ভালো লাগবে তখন। বাড়ির সবাই দৌড়ে কাছে আসবে। ব্যাগ থেকে বের করে ওদের হাতে ধরিয়ে দেব নতুন পোশাকের প্যাকেট। নতুন পোশাক পেয়ে কী যে খুশি হবে ওরা। ওদের আনন্দে আমার বাড়তি আনন্দ যোগ হবে। মাকে জড়িয়ে ধরে রান্নাঘরে যাব। আমার জন্য রান্না করে রাখা খাবার মা নিজে হাতে প্লেটে দেবেন। প্রাণ ভরে মনে তৃপ্তি করে খাব। মায়ের হাতের রান্না খাওয়ার পর মনে হবে এত দিন না খেয়ে ছিলাম। তারপর কেনাকাটায় কিছু বাদ পড়েছে কি না, সেগুলো কিনে ফেলব।
গ্রামের বাল্যবন্ধুটার সঙ্গে দেখা হবে। কত দিনের জমানো কথা বলব প্রাণ খুলে। গ্রামে সোনার বাংলার মাটিতে খালি পায়ে হাঁটব লুঙ্গি পরে। পুকুরে গোসল করব। পাশের বাড়িতে যাব। সত্যি বাড়িতে যাওয়ার আনন্দে হৃদয়ের এক কোণে ঈদের আনন্দের অন্য রকম অনুভূতি শুরু হয়েছে।
কিন্তু সামান্য অসাবধানতার কারণে সব আনন্দ মাটি হয়ে যেতে পারে। কারণ দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনার কারণেই আনন্দের ভাগাভাগির বদলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সব ইচ্ছা অপূরণ থেকে যাবে। পরিবার হারাবে একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটাকে। হয়তো বা আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারেন।
দুর্ঘটনার পাশাপাশি ছিনতাইকারী বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যেতে পারেন বাড়িতে। এসব থেকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। নিজের সামান্য ভুলের জন্য যেন বড় রকমের কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।
নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই। নিরাপদে বাড়ি ফিরতে হলে নিজে সতর্ক হতে হবে, অন্যকেও করতে হবে সতর্ক। তবেই আমাদের আনন্দে পরিপূর্ণতা আসবে। বিগত দিন ঈদে বাড়ি ফেরার দৃশ্য দেখলে সত্যি বাড়ি ফিরতে ভয় লাগে। কখন যে বিপদ ঘটে যায়। মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, সড়কে গাড়ি বিকল হওয়া, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, লঞ্চডুবি।
ঈদের আগে ছাড়া প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। এ দুর্ঘটনার খবর সবাই জানতে পারি আমরা। কিন্তু ঈদের উৎসবে লোকজন বাড়ি যাওয়া শুরু করলে পরিস্থিতির আরো ব্যাপক অবনতি ঘটে। আর এসব থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের সবাইকে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি।
মহাসড়কগুলো মেরামত করা খুব জরুরি। কিছু কিছু সড়ক রয়েছে যেগুলো গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী। এর ওপরে ঈদের সময় অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল করে। এ বছর তো বৃষ্টিতে অনেক রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এ রাস্তাগুলো খুব দ্রুত মেরামত করা খুবই প্রয়োজন। ইতিমধ্যে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন মহাসড়ক পরিদর্শন করেছেন। রাস্তা মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। দেখা যাক এর সুবিধা আমরা কতটা ভোগ করতে পারি।
ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রীদের ভিড় বেড়ে যাওয়ার ফলে যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়। এসব গাড়ি রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া উচিত। এ গাড়িগুলো যেন কোনোভাবে মালিকপক্ষ রাস্তায় নামাতে না পারে সে ব্যাপারের প্রশাসনের সতর্ক থাকতে হবে।
ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রীদের ভিড় বেড়ে যাওয়ার ফলে যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়। এসব গাড়ি রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া উচিত। এ গাড়িগুলো যেন কোনোভাবে মালিকপক্ষ রাস্তায় নামাতে না পারে সে ব্যাপারের প্রশাসনের সতর্ক থাকতে হবে।
যদিও রাস্তায় নামায় তাহলে সেগুলো মেরামত করে নামাতে হবে। যাতে কোনো রকম ত্রুটি না থাকে। এখন থেকে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা উচিত। ট্রাফিক পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে । কারণ, রাস্তায় কোনো রকম ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি যেন না চলে। রাস্তায় যেন গাড়ির জট না লাগে সে জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে তাদের।
বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িচালক নাকি অনেক সময় স্বাভাবিক থাকেন না। কারণ, অনেক চালক নেশাগ্রস্ত। নেশা করে গাড়ি চালাতে ওঠেন। সেই সব চালককে গাড়িতে ওঠার আগে পরীক্ষা করা উচিত। তাই চালকদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। যানবাহনের মালিকদের তরফ থেকে চালকদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা থাকা খুবই প্রয়োজন। সরকারকেও এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িচালক নাকি অনেক সময় স্বাভাবিক থাকেন না। কারণ, অনেক চালক নেশাগ্রস্ত। নেশা করে গাড়ি চালাতে ওঠেন। সেই সব চালককে গাড়িতে ওঠার আগে পরীক্ষা করা উচিত। তাই চালকদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। যানবাহনের মালিকদের তরফ থেকে চালকদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা থাকা খুবই প্রয়োজন। সরকারকেও এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ শুধু সড়কপথে নয়, নৌপথেও অনেক বেড়ে যাবে। ফলে নদীপথগুলোতে বাড়তি লঞ্চ নামানো হয়। যার মধ্যে অনেক পুরোনো, ভাঙাচোরা, এমনকি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়া লঞ্চও রং করে নামানো হয়। এর ফলে লঞ্চ ডুবে শত শত লোকের মৃত্যু হয়।
পুরোনো ও ভাঙাচোরা লঞ্চ রং করে ও দায়সারাভাবে মেরামত করে নদীপথে চালানো বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আশা করি, নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার পথে একটি মানুষ যেন প্রাণ না হারান।
আমরা সবাই সতর্ক থাকি। অন্যকে সতর্ক করি। নিরাপদে বাড়ি ফিরে। সবাই আনন্দে পালন করি ঈদ উৎসব।
আমরা সবাই সতর্ক থাকি। অন্যকে সতর্ক করি। নিরাপদে বাড়ি ফিরে। সবাই আনন্দে পালন করি ঈদ উৎসব।